অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিনে যে মতামত মানজুর-আল-মতিন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন পেরিয়েছে। মুক্তির আনন্দের সাথে গগনচুম্বী স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল এবারের বর্ষা। যে শ্রমিক জীবন দিয়েছেন, হয়তো তিনি ভেবেছিলেন মুক্ত বাংলাদেশে তার সন্তান অনাহারে থাকবে না। যে নারী রাস্তায় নেমে সমান তালে লড়েছেন পুরুষের পাশাপাশি, জীবন দিয়েছিলেন যাদের অনেকে, তারা কি এমন এক সমাজের স্বপ্ন দেখেননি, যেখানে তাদেরও মাথা উঁচু করে বাঁচার অধিকার থাকবে? পাহাড় কিংবা সমতল থেকে যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা এসে দাঁড়িয়েছিলেন জুলাইয়ের রক্তস্নাত রাজপথে, তারাও কি সমান অধিকারের স্বপ্ন দেখেননি? মাদ্রাসার যে শিক্ষার্থী লড়াইয়ে মাঠে এসে দাঁড়িয়েছিল ইংরেজি মাধ্যমে পড়া শিক্ষার্থীর পাশে, তারাও কি সমাজে সমান সুযোগ আর অধিকার পাওয়ার স্বপ্ন দেখেননি?জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিস্মৃতি আর অবহেলার অন্তরাল থেকে কাজী নজরুল ইসলামকে নতুন করে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের সামনে। এদেশের তারুণ্যের মুক্তির সংগ্রামে শক্তি দিয়েছে তার গান-কবিতা। দেয়ালে দেয়ালে নজরুলের লেখনী স্বপ্ন দেখিয়েছে নতুন বাংলাদেশের। আজকের প্রেক্ষাপটে মনে পড়ছে তার অমর সৃষ্টি ‘সাম্যবাদী’ কবিতার কথা।জুলাইয়ের উত্তাল দিনগুলো সব বাধা-ব্যবধান ঘুচিয়ে সবাইকে এক কাতারে এনেছিল বলেই স্বৈরাচার হটাতে পেরেছি আমরা। ৫ অগাস্টের পর দেশে না ছিল পুলিশ, না ছিল কোনো সরকার। কিন্তু তারপরও সবাই মিলে অরাজকতা ঠেকিয়েছি।ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাড়ায় মহল্লায় কমিটি করে ডাকাতি ঠেকিয়েছে এলাকার মানুষ। থানা থেকে লুট করা অস্ত্র উদ্ধার করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। এ সবই আমাদের অর্জন। গণপিটুনির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে এই সময়। কিন্তু তার বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছে দেশের মানুষ।মানজুর-আল-মতিন ।। আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট